মন আজ ছন্দহীন
বইয়ের
তাকটা ঝাড়তে গিয়ে পুরোনো
ডাইরিগুলোতে হাত পড়লো বহুদিন
পর। সেই
স্কুল আর কলেজের শুরুর
দিক। তখন
তরুণ আনন্দ ধরা দিত
ছন্দে, উতলা যন্ত্রনা হয়ে
যেত কবিতা। কখনো
আকাশ-বাতাস, কখনো ছেলেবেলার
কথা, কখনো বন্ধুত্ব, কখনো
বা প্রেম কিংবা বিরহ,
যখন যা ছুঁয়ে গেছে
মন ধরা আছে তাই
পাতায় পাতায় কবিতা আর
ছন্দের তালে মিলে।
বেখেয়ালে
অনেক্ষন উল্টে পাল্টে দেখলাম। কোথায় হারিয়ে
গেলো সেই মন, সেই
ছন্দ, আনমনা তবু উতলা,
বিরহী তবু শান্ত সেই
মানুষটা? কেন খুঁজে পাইনা
তাকে আজ? পাতার পর
পাতা যার ভরে যেত
নিজের অজান্তে তারই আজ লিখতে
গিয়ে ভাষার কেন অভাব?
কোন এক অজানা রোগে
যেন নিঃশব্দে শেষ করে দিয়েছে
সবটুকু ক্ষমতা।
নিজের
লেখা পরে নিজেই চমকে
উঠছি আজ। সত্যিই এ আমার
লেখা!! এমন সুন্দর ছন্দ
মিলিয়ে ছিলাম! যেন মনে হয় তখনই বড় ছিলাম,
সময় আর ডিগ্রির সাথে
সাথে দিনদিন ছোট হয়ে
গেছি. তাই আজ আর
সেই ছন্দ নেই, নেই
সেই সাবলীল ভাষা।
হয়তো আজ আর আমাদের
অনুভূতিগুলোই সহজ স্বাভাবিক নেই।
আজ কি আমরা পারি
তেমন করে মন খুলে
ভালোবাসতে, সেই রকম অনাবিল
হাসতে কিংবা ভনিতা না
করে রাগ, দুঃখ, অভিমানের
প্রকাশ ঘটাতে। আজ ভালোলাগা থেকে
ভালোবাসা সবই যেন কোন
অজানা আইনের কানুনী নিয়মের বাঁধনে
বাঁধা। আজ
অভিমান শুধু লুকোনোর, বিরহ
শুধু গোপন খবর, উচ্ছাস
অন্যকে দেখানোর আর ভালো থাকা
ফেসবুকের স্ট্যাটাসের দাবি, সবটাই যেন
লুকোচুরির ভুলভুলাইয়া। আজ
অপেক্ষা বড় নগ্ন কাছের
মানুষের জন্য, যে 'কাছের'
ব্যাখ্যা দিতে পারে সমাজ
আবার সেই অপেক্ষাই চির সুপ্ত
যখন তা অকারণে ভালোলাগা
মানুষটার জন্য।
এই জটিলতা আমাদের কুড়ে
কুড়ে খেয়ে চলেছে প্রতি
নিয়ত। শেষ
করে দিচ্ছে আমাদের শৈশবের
প্রাচুর্য্য, আর দিয়ে যাচ্ছে কুটিলতার জঞ্জাল আর দূষণ। তাই
অপুষ্ট মন আজ ছন্দহীন; বড়ই প্রবীণ।
Comments
Post a Comment