নতুন কোয়ার্টারে এসে ঝাড়পোঁছ চলছিল। হঠাৎই বাঙ্কের উপর থেকে নেমে এল বেশ কিছু পুরনো কাগজপাতি। আগে যারা থাকত তারাই ফেলে গেছে হয়তো। কি সব একগুচ্ছ মেয়েলি ঘর সাজানো, সাজগোজ আর রান্নার ন্যাকা ন্যাকা ম্যাগাজিন। কি করে যে মানুষ এসব দিনের পর দিন পড়ে !! আরও ছিল কিছু আবোলতাবোল কাঁচা হাতের লেখা ভরা ডাইরি। মাঝে মাঝে গোল, চৌকো, ত্যাবড়া-ধ্যাবড়া লাইন টানা ছবি আঁকা। হয়তো কোন বাচ্চা ছিল, যে নিজের মত সাহিত্য চর্চা করেছিল এগুলোতে। বেশির ভাগ পাতাই তার খালি। ডাইরিগুলো তাই আলাদা করেদিলাম; কাজের মেয়েকে দিয়ে দেব। তার ছেলেমেয়েগুলো ছোট, স্কুলে পড়ে। ফাঁকা পাতাগুলো ওদের কাজে লেগে যাবে। সব কিছুর মাঝ থেকে বেরিয়ে এল একটা খাতা; বেশ কিছু পাতা মাঝে মাঝে ছেঁড়া। যেন কেউ রেগে খাবলে ছিঁড়ে নিয়েছে। তবু বাকিটুকু পড়া যাচ্ছে। বেশ সুন্দর ঝকঝকে হাতের লেখা। শুরুর দিকের পাতাগুলো মলিন হয়ে এলেও অস্পষ্ট নয়। হাল্কা চোখ বুলিয়ে বুঝলাম এ খাতা শুধুই খাতা নয়; এই খাতা এক জীবনী, এক চলচ্চিত্র - অমুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। তাই হয়তো যাওয়ার সময় পিছনে ফেলে গেছে। বাকি সবকিছু আবর্জনাতে গেলেও এই খাতাটি যত্ন করে তুলে রেখেদিলাম পরে পড়ব বলে। ********
লক্ষ্মণ রেখা টেনে দিলাম, পার হবি না তুই, স্কুলের মজা খেলার মাঠে দারুন হৈ চৈ। গন্ডী কাটার সেই যে খেলা শিখিয়েছিল ছোটোবেলা সারা জীবন পায়ের বেড়ী সেই ছিল তোর 'পায়েখড়ি'। নিয়ম বাঁধা সমাজ হেথা রোজই নতুন নিয়ম শেখা। নিয়মের ঘোমটা ঢাকা আমাদের মনের চাকা। এরই মাঝে নতুন করে তুমি কেন বাঁধছো মোরে? ভালবাসার মানুষ হয়েও খিল কেন গো মনের দোরে? তোমার ওই মনের খাতা পড়তে চাই প্রতি পাতা চেনা আর মনের জানা সেখানেই আত্মীয়তা। সেই যদি গন্ডী দিলে হিসাবের আগল তুলে তবে আর মায়া কিসে! হারালাম ভিড়ে মিশে। লক্ষ্মণ রেখা টেনে দিলে পার হব না আর ভিড়ের মাঝেই পেরিয়ে যাব জীবন পারাবার।
বাগানের কোণে একটা ছোট নয়নতারা গাছ । কখন যে কি ভাবে গজাল কেউ জানে না । সাজান বাগানে গাছটা যেন এক আপদ । আজ এদিকে ঝোকে তো কাল ওদিকে । এক টানে তুলে ফেলে দিলাম তাই একদিন । ভাবলাম আপদ গেল । একি !! মাস ঘুরতে না ঘুরতেই দেখি আবার এককোণে উঁকি মারছে সেই সাদা নয়নতারা । উফফ !! কি বিপদ বল দেখি ? বিরক্ত হয়ে আবার তুলে ফেলতে গেলাম । কিন্তু টান মারতে গিয়েও থমকে গেলাম । এক আজানা মায়া । থাকলই না হয় এক পাশে ! সুন্দর লাগছে সাদা ফুলগুলো । কেন মিছে আঘাত হানা ! থাকই নাহয় , একটু কেটে ছেঁটে এককোণে । দিন গেল , মাস গেল , বছর ঘুরে গেল । নিতান্ত অবহেলায় আর অযত্নে পরে রইল সেই নয়নতারা বাগানের কোণে । গড়িয়ে আসা জলেই তার জীবন , বেশি ডাল - পালা মিললেই পড়ে কোপ । তাবু সে বেঁচে থাকে নিজের চেষ্টায় । সময়ের সাথে বদলে যায় কতকিছুই । বদলে গেল অবহেলাও । বাগানের মরসুমি গাছগুলির যাওয়া আসার মাঝে , চিরন্তন এই সাদা নয়নতারা । বিরাম নেই তার ফুল ফোটানোর । গোধূলি আলোয় সাদার নির্মলতা মন কেড়ে নেয় । নিজের গুণেই মনের কোণে কখন যে জায়গা করে নিল বুঝতেই পারলাম না । কখন যে রোজ খেয়াল রাখা শুরু করলাম নিজেই জানি না । জানি না কখন দিলাম তাকে অব
Comments
Post a Comment