অশ্রু



নিঃশব্দে ঝরে পরা বিন্দু বিন্দু মানিক অথবা আর্তনাদের গঙ্গা-যমুনা, কোনটাই নয় অভিপ্রেততবু মানুষ কাঁদে সেই জন্ম লগ্ন থেকে শুরু হয় এই সখ্যতা কারণে অকারণে দুই চোখে জড়িয়ে থাকার নিদারুন প্রতিশ্রুতি ছোটোবেলার কথা না বলতে পারার বয়েসে চোখে জল আসে শরীরের কষ্টে, কারণ তখন থাকেনা বোঝানোর ভাষা শুধু আর্তনাদের বুলিটুকুই হয় ভরসা খিদে পেলে কান্না, তেষ্টা পেলে কান্না,গরম করলে কান্না, শীত করলেও তাই
সময় গড়ায়মানুষ বড় হয় ভাষা শেখে শুরু হয় বাগবিতন্ডাকি, কেন, কোনটা, কখন, কি করে -- আরো কত শত প্রশ্নের ঝুলি উত্তর কখনো জোটে কখনো জোটে না সব কিছু জানার আর করার ইচ্ছায় মন তখন দামালরাশ টেনে ধরতে বড়দের শাসন, আর পাল্লাদিয়ে ছোটদের কান্না আর অভিমানচোখের জলের ভাষায় সব প্রতিবাদ গোপন তবু প্রকটএই কান্নায় তখন নিজের দাবি প্রতিষ্ঠা করার অমোঘ অস্ত্র পরীক্ষায় ফল খারাপ লুকিয়ে ঘরের কোণে ঝরঝর ঝর্না আকুল ধারায় কাকেই বা বলবে বল! তাই নিজেকেই নিজের সান্ত্বনা একাকিত্বের আড়ালে
বড় হওয়া কি বিপদের, তাই না? বয়েস যত বাড়ে কান্নার সাথে সখ্যতাও ততই বাড়তে থাকেsimply linearly proportional. কোনো ব্যতিক্রম নেইকান্নার কারণের কোনো অভাব হয়না, শুধু খুঁজে পাওয়া যায়না তার প্রতিকারকি বিচিত্র এই জীবন!কেউ ভালবাসে তো তাকে কাছে না পেলে দুই চোখে বর্ষা, কেউ ভালো না বাসলে আক্ষেপের ঝর্নাআবার ভালবাসার মানুষের নিষ্ঠুরতায় চোখ ঝাপসা হতেই বা কতক্ষণ? আছে ব্যর্থতায় অব্যক্ত যন্ত্রণা,একাকিত্বে অসহায় বেদনা, আঘাতে নিঃশব্দ আর্তনাদ, অবিশ্বাসে ভাষাহীন বধিরতা -- সবই মুক্তি পায়বর্ণহীন জলধারায়
সময়ের সাথে বদলে যায় সব ছোটোবেলার কান্না মানুষকে টেনে আনত কাছে, বড় হলে সবই অরন্যে রোদন  কেউ ফিরেও দেখেনা কে কাঁদলো আর কেনই বা কাঁদলো সেসময় কোথায় বল? সবাই শুধুদৌড়ে চলেছে কেন আর কিসের জন্য তাও কি ছাই কেউ জানে? তবু দৌড়ে চলেছে সেই অজানার লক্ষ্যেঅবিরাম, অবিশ্রান্ত পাশের মানুষটার কান্নাও হয়ে যায় তুচ্ছ অসহায় সেই মুহূর্ত গুলোতে ভালবাসা হার মানে জেদ, অভিমান আর স্বার্থের কাছেঅর্থহীন সেই ক্রন্দন তবু তো বাগ মানেনা মন ভেসেযায় দুচোখের কোল নিঃশব্দ অশ্রু ধারায়

Comments

Popular posts from this blog

ক্ষয় আরও গভীরে

লক্ষ্মণ রেখা

নয়নতারা